পঞ্চমীর আনন্দের দিনে অন্ধকার নেমে এল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে। খালের জলে তলিয়ে গিয়ে মৃ- হল দুই ভাই সঞ্জু বেরা (১৫) ও রঞ্জু বেরা (৯)-র। শুক্রবার দুপুরে ঘটে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, আর শনিবার দুপুরে হাতে গামছা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হয় দুই নাবালকের নি থর দেহ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাবা-মার অজান্তেই ছোট ভাই রঞ্জুকে সাঁতার শেখাতে পলাশপাই খালে নিয়ে গিয়েছিল বড় ভাই সঞ্জু। ভাইয়ের হাতের সঙ্গে নিজের হাত গামছা দিয়ে শক্ত করে বেঁধে রেখেছিল সে। কিন্তু খালের জলের প্রবল স্রোতের সামনে সেই বাঁধন টিকল না। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভেসে যায় দুই ভাই।
ঘটনার সময় ঘাটে আরও কয়েকজন স্নান করছিলেন। কিন্তু তাঁরা মরিয়া চেষ্টা চালিয়েও দুই ভাইকে উদ্ধার করতে পারেননি। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে নিয়ে তল্লাশি শুরু হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চললেও দেহের কোনও হদিশ মেলেনি। অবশেষে শনিবার সকাল থেকে ফের তল্লাশি শুরু হয়। দুপুর নাগাদ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সাতপোতা এলাকায় খালের ধারে হাতে গামছা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হয় দুই ভাইয়ের নি থ র দেহ।
জোতঘনশ্যাম গ্রামের কৃষক সত্যনারায়ণ বেরার দুই ছেলে ছিল সঞ্জু বেরা ও রঞ্জু বেরা । তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “বড় ছেলে সঞ্জুর ব্রংকাইটিস আছে, তাই ওকে কখনোই খাল বা নদীতে নামতে দেওয়া হত না। কিন্তু ওই দিন মা-কে না জানিয়েই ও ভাইকে নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। তারপরই ঘটে এই সর্বনাশ।”
পঞ্চমীর দিনে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় মুহূর্তে শোকের ছায়া নেমে এসেছে জোতঘনশ্যাম গ্রামে। খুশির উৎসবের সময়েই দুই ফুলের মতো শিশু হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছে বেরা পরিবার। এলাকাবাসীরা জানান, এই দৃশ্য কোনওভাবেই ভোলা যাবে না।
দাসপুর থানার পুলিশ মৃ দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে এবং একটি অস্বাভাবিক মৃ র মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।