সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনীকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করে চরম বিপাকে পড়লেন নদিয়ার এক যুবক। ধৃতের নাম বিশ্বজিৎ বিশ্বাস। তিনি পেশায় একজন বডি বিল্ডার। শুক্রবার রাতে ফেসবুকে সেনাবাহিনীকে অপমানজনক মন্তব্য করার অভিযোগে ধানতলা থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃত বিশ্বজিৎ নদিয়ার ধানতলা থানার অন্তর্গত আড়ংঘাটা এলাকার বাসিন্দা। সম্প্রতি ফেসবুকে লাইভে এসে তিনি একজনকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন। জানা যায়, সেই ব্যক্তি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত। সেই প্রসঙ্গেই সেনা নিয়ে কুরুচিকর ও কটূ মন্তব্য করেন বিশ্বজিৎ। লাইভটি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়।
এই মন্তব্যের পরই একাধিক থানায় বিশ্বজিতের নামে অভিযোগ দায়ের হয়। ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝে শুক্রবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার ধৃতকে রানাঘাট আদালতে তোলা হয়।
আদালতে নিজের ভুল স্বীকার করে বিশ্বজিৎ বলেন, “ওটা একটা লাইভ ভিডিও ছিল। একজনের সঙ্গে ব্যক্তিগত সমস্যা হচ্ছিল, সে আমাকে গালিগালাজ করছিল। আমি নির্দিষ্ট একজনকে জবাব দিতে গিয়েই ভুলবশত সেনা নিয়ে মন্তব্য করে ফেলি। আমি তার জন্য ক্ষমা চেয়ে ভিডিওও করি। কিন্তু মানুষ সেটা গ্রহণ করেননি। এখন আইন যা শাস্তি দেবে, মাথা পেতে নেব। ভারতীয় সেনা সম্পর্কে এমন কথা বলে আমি নিজেও গভীরভাবে লজ্জিত ও দুঃখিত।”
ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ। দেশরক্ষায় যারা জীবন বাজি রাখেন, তাদের নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না বলে মত অনেকের। অনেকে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “এ ধরনের মন্তব্য শুধু সেনাকে নয়, গোটা দেশের আত্মমর্যাদাকে অপমান করে।”
পুলিশ জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশবিরোধী বা রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য কোনওভাবেই সহ্য করা হবে না। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিশ্বজিতের এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল, সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘লাইভ’ বা পোস্ট করার সময়ও দায়িত্বশীল আচরণ জরুরি। ব্যক্তিগত রাগ বা মতভেদ দেশের সেনাবাহিনী বা জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রকাশ করলে তার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ।