টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি ও জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি ঘাটালে। সেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রবিবার বিকেলে আজবনগর এলাকায় পৌঁছন খড়গপুরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। পরিস্থিতি দেখে ক্ষোভ উগরে দেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। নাম না করে কটাক্ষ করেন তৃণমূল সাংসদ দেবকে। এবং একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আক্রমণ করেন তিনি।
এই দিন হিরণ বলেন, “রাজনীতি করতে গেলে সবাই মিথ্যে বলে। হয়তো উনি (দেব) একটু বেশি মিথ্যে বলে ফেলেন বাধ্য হয়ে। তার জন্য ওনার কোন দোষ নেই। ১৫ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন—ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান হবে, তুমি ভোটে দাঁড়াও। কিন্তু হয়েছে কি? কিছুই হয়নি। তাহলে উনি কী করবেন?”
বন্যা পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত সাহায্য না থাকার অভিযোগ তুলে হিরণ বলেন, “আমি চাই মুখ্যমন্ত্রী শুধু ‘খিচ মেরি ফটো’ না করে সত্যিই মানুষের জন্য কিছু করুন। নৌকা, বোট, খাবারের ব্যবস্থা করুন। দুর্যোগে মানুষকে একা ফেলে রেখে শুধু রাজনীতি করলে হবে না।”
এর আগে দুপুরে ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। জলাধার থেকে অনুমতি ছাড়া জল ছাড়ার জন্য ডিভিসি-কে দায়ী করেন তিনি। আর সন্ধ্যার পরেই হিরণের কটাক্ষ, “এরপর মানস ভুঁইয়া বলবেন ভগবানের সঙ্গে তৃণমূলের চুক্তি ছিল! ভগবান চুক্তি ভেঙে বেশি বৃষ্টি দিয়েছেন, তাই বন্যা হয়েছে।”
বিধানসভায় এই ইস্যুতে কথা বলতে চাইলেও আমাকে সুযোগ দেওয়া হয় না, অভিযোগ হিরণের। “স্পিকার মাইক বন্ধ করে দেন। যদি বলার সুযোগ দেওয়া হয়, আমি ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাই। বলতে চাই কারা মিথ্যে কথা বলে, আর কারা কাজ করে না।”
তিনি জানান, বন্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখব। “মানুষ সব দেখছে—১৫ বছর ধরে এখানে একজন সাংসদ আছেন, কিন্তু মানুষের জন্য কতটা কাজ করছে, সেই বিচার ঘাটালের মানুষই করবে।”
তবে বিজেপি বিধায়কের এই মন্তব্যের পালটা জবাব দিয়েছেন ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি। তাঁর বক্তব্য, “বিজেপি এখন ঘোলা জলে মাছ ধরতে এসেছে। যখন মানুষের পাশে থাকা উচিত ছিল, তখন এদের কোথাও দেখা যায়নি। এরা শুধু রাজনীতির জন্যই রাজনীতি করে ।”