মালদা: দুর্গাপুজোর উৎসবমুখর সময়ে এক অন্যরকম মানবিক দৃষ্টান্ত গড়ল মালদার আইহো উচ্চ বিদ্যালয়। টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে হোস্টেলের দুস্থ ছাত্রদের হাতে নতুন জামাকাপড় তুলে দিলেন একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা। সমাজসেবায় এই সুন্দর উদ্যোগে মুখে হাসি ফুটল অভাবী ছাত্রদের।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ আইহো উচ্চ বিদ্যালয়ের গেটের সামনে বিশেষ আয়োজন করে ইন্টার্যাক্ট ক্লাব অফ সিল্ক সিটি মালদার পক্ষ থেকে। ছাত্রছাত্রীদের এই সংগঠনের পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এবং রোটারি ক্লাব সিল্ক সিটি মালদা। সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কাজে আগেও এই ক্লাব সক্রিয় ছিল, কিন্তু এবারের উদ্যোগটি বিশেষভাবে প্রশংসনীয় কারণ এর পেছনে রয়েছে ছাত্রছাত্রীদের নিজেরাই জমানো টিফিনের টাকা।
উৎসবের মরশুমে নতুন জামাকাপড় পেয়ে উচ্ছ্বসিত হোস্টেলের প্রায় ২০ জন দুস্থ ছাত্র। তাঁদের হাতে জামা ও প্যান্ট তুলে দেওয়া হয় ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে। অনুষ্ঠান চলাকালীন উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা, যাঁরা এই সুন্দর উদ্যোগে পাশে ছিলেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা করেছেন।
বিদ্যালয়ের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন, “আমরা চাই উৎসবের আনন্দ শুধু আমাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে সবার মুখে হাসি ফোটাক। তাই নিজেদের টিফিনের টাকা থেকে কিছুটা সঞ্চয় করে এই উদ্যোগ নিয়েছি।” শিক্ষক-শিক্ষিকারাও গর্ব প্রকাশ করে জানান, “এই প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীরা কেবল পড়াশোনায় নয়, সমাজের প্রতিও দায়িত্বশীল — এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।”
এই কর্মসূচি নতুন নয়। প্রায় কয়েক বছর ধরেই দুর্গাপূজার আগে ছাত্রছাত্রীরা এমন সমাজসেবামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করে আসছে। প্রতিবারই হোস্টেলে থাকা দুস্থ ছাত্রদের জন্য জামাকাপড়, স্টেশনারি বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস তারা নিজের হাতে পৌঁছে দেয়।
আইহো উচ্চ বিদ্যালয়ের এই মানবিক উদ্যোগ প্রমাণ করে, উৎসব মানে শুধু আলো ও সাজ নয়, উৎসব মানে ভাগ করে নেওয়া। ছাত্রছাত্রীদের এই উদ্যোগ গোটা মালদা জেলায় এক ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দিল — একটি ছোট পদক্ষেপও বড় পরিবর্তনের পথ দেখাতে পারে।